উখিয়া প্রেস ডেস্কঃ শুধু রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের অবসান নয়, ভাসানচর উপশম করবে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য সৃষ্টি হওয়া নিরাপত্তা হুমকিও।’ ভাসানচরে বিকন অপ হোপ ফর দ্যা রোহিঙ্গাস শীর্ষক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন।
পুনর্বাসনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের ফলে মিয়ানমার সরকার ফায়দা তুলছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভাসানচরে স্থানান্তর মূল সমাধান নয়, সঙ্কট নিরসনে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। ভূরাজনৈতিক স্বার্থের কারণে চীন ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ মিয়ানমারকে জোরালো সমর্থন দেওয়ায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
কক্সবাজারে ঘনবসতিপূর্ণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। হতাশাগ্রস্ত রোহিঙ্গারা মাদক ও মানবপাচারসহ নানা ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়ানোসহ স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। যা এ অঞ্চলের দেশগুলোর স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধু অর্থনৈতিক ও সামাজিক সঙ্কট নয়, ১১ লাখ রোহিঙ্গার চাপে বিপর্যস্ত পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ভাসানচর, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভালোভাবে জীবনযাপনের সুযোগ করে দিয়েছে। এই চরে এক লাখ রোহিঙ্গার পুনর্বাসনে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে শুধু বাংলাদেশ নয় চীন, ভারত থাইল্যান্ডসহ এ অঞ্চলের দেশগুলোর জন্য সৃষ্ট নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলার বিকল্প পন্থা হিসেবে কাজ করবে।
এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনের উদ্যোগ মিয়ানমারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ওপর চাপ কমাবে। তবে অর্থনৈতিক স্বার্থ নয় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।
ভাসানচরে পুনর্বাসিত রোহিঙ্গারা খুশি হলেও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বলা হয়েছে এটি একটি প্রত্যন্ত এলাকা। যেখানে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম চালানো যাবে না। এছাড়া বন্যা ও ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা প্রবল। যদিও এসব ভ্রান্ত ধারণা। তথ্য ঘাটতির কারণে এমন নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে। ইতবিাচক প্রচারের মাধ্যমে এই ভুল ভেঙে দিতে হবে। ভাসানচরে জীবিকা নির্বাহের সব ব্যবস্থাই আছে।